চট্টগ্রামে উদ্ধার কেএনএফ’র ইউনিফর্ম নিয়ে ধোঁয়াশা

২৭ মে ২০২৫ - ০৮:৫০ পূর্বাহ্ণ
 0
চট্টগ্রামে উদ্ধার কেএনএফ’র ইউনিফর্ম নিয়ে ধোঁয়াশা

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস নামে একটি কারখানায় গেলো দুই মাস ধরে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ এর ইউনিফর্ম তৈরী হচ্ছিল। সেখান থেকে গেল ১৮ মে, উদ্ধার হয় ২০ হাজার ৩শ পিস ইউনিফর্ম। গ্রেপ্তার হয় কারখানাটির মালিক সাহেদুল ইসলামসহ তিনজন।

এদিকে উদ্ধার হওয়া পাহাড়ি সংগঠন কেএনএফ-এর ২০ হাজার ইউনিফর্ম ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য। প্রশ্ন উঠেছে, সংগঠনটির সদস্য সংখ্যার চেয়ে বহুগুণ বেশি ইউনিফর্ম কেন তৈরি হচ্ছিল? অন্যদিকে এসব ইউনিফর্ম নিয়ে পুলিশের নীরবতাও রহস্যজনক। 

এ বিষয়ে গার্মেন্টসটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে কর্মীরা জানান, গেলো মার্চ থেকে এসব ইউনিফর্ম তৈরির কাজ হচ্ছিল কারখানায়। যার ক্রেতা ছিল গোলাম আজম এবং নিয়াজ হায়দার নামের দুই ব্যক্তি। তাদেরও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কারখানাটির কর্মীরা বলেন, এই মালগুলো কি চোরের না ডাকাতের আমরা তো জানি না, ওরা আইনা দিছে আমরা কাজ করছি। কোম্পানি তো আর জানে না এগুলো কোনো একটা অবৈধ সংগঠনের। কিছু ফেব্রিক আর কিছু অর্ডার নিয়ে আমাদের কাছে আসে, আসার পর আমাদের মালিক সুইংয়ে আমাদেরকে দেয় আমরা দীর্ঘ দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত সুইং করি।

এ দিকে মামলা হলেও এসব পোশাক জব্দের পর একসপ্তাহ বিষয়টি চেপে রাখে পুলিশ। সবশেষ দুদিন আগে তা জানাজানি হলেও; এখনও তারা মুখ খুলছে না। সামান্য কয়েক বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের পর যেখানে ব্যাপক প্রচার করে পুলিশ, সেখানে চেষ্টা চলছে এ ঘটনা গোপন করার।

এত বিপুল ইউনিফর্ম কেন তৈরি করা হচ্ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও। পাশাপাশি টাকার উৎস নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত কুকিচিন ভূ-রাজনীতির কোনো একটা ফাঁদে পা দিয়েছে, কারণ তাদেরকে কেউ না কেউ অর্থ যোগান দিচ্ছে। সংখ্যার দিক থেকে যদি প্রতিজনে ২টা করে ইউনিফর্ম তৈরি হয় তাহলে তারা প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার সদস্য নিয়ে আগাচ্ছে। কেএনএফ বড় কোন পরিকল্পনা সাজাচ্ছে কিনা তা খোঁজা দরকার।

অন্য দিকে কেএনএফের বিপুল পরিমাণ ইউনিফর্ম উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। তাই, বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলছে সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনের পরিচালক ব্রি জে নাজিম উদ দৌল্লাহ বলেন, টোটাল ভম কমিউনিটির জনসংখ্যাই হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার। সে ১২ হাজারের মধ্যে ছোট বাচ্চা আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই শামিল। সেক্ষেত্রে এ ৩০ হাজার ইউনিফর্ম কেএনএফের কিনা সেটা অবশ্যই খুঁজে দেখার সুযোগ আছে। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াসলি নিয়েছি।কুকিচিনের সদস্যদের নিয়ে এসে ২ কোটি টাকার চুক্তিতে এসব ইউনিফর্মের ক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন মহেলাসিন মারমা ওরফে মং নামে এক ব্যক্তি। যদিও এখনও পলাতক তিনি।