পরিচয় না দিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না: আইন উপদেষ্টা

২৪ জুলাই ২০২৫ - ১৫:০৮ অপরাহ্ণ
 0
পরিচয় না দিয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না: আইন উপদেষ্টা

আমরা কিছু ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি। এ সংশোধনের পর কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশ বা সংস্থার ক্লিয়ার পরিচয় দিতে হবে। আইডি কার্ড দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি গ্রেপ্তার হচ্ছেন, সে চাহিবামাত্র আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এসব তথ্য জানান। 

আইন উপদেষ্টা বলেন, থানায় আনার পর গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির স্বজনদের জানাতে হবে। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই তার পরিবারকে জানাতে হবে। প্রতিটা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোন আইনে এবং কী কারণে গ্রেপ্তার হয়েছে, সবকিছুর একটা মেমোরেন্ডাম থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত ছিল গ্রেপ্তারের বিষয়ে যাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি থাকে। গ্রেপ্তারের পরবর্তীকালে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির যেন অধিকার থাকে। এ নিয়ে দুটি রায় ছিল। এই রায়ের আলোকে আরও বিস্তারিতভাবে আমরা বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ সবার সঙ্গে বৈঠক করে আজকে চূড়ান্ত করেছি। 

আসিফ নজরুল বলেন, সংশোধনী কার্যকর হওয়ার পর থেকে যে পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করবেন, তার পরিষ্কার পরিচয় থাকতে হবে। তার ইউনিফর্মে নেমপ্লেট থাকতে হবে, আইডি কার্ড থাকতে হবে। যে ব্যক্তি গ্রেপ্তার হচ্ছেন- তার চাহিদামাত্র পুলিশ কর্মকর্তার আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। এরপর গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে যখন থানায় নিয়ে আসা হবে, যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু, কিংবা আইনজীবীকে যোগাযোগ করে জানাতে হবে। এই কাজে কোনও অবস্থাতেই ১২ ঘণ্টার বেশি সময় নেয়া যাবে না। 

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির শরীরে যদি কোনও আঘাতের চিহ্ন থাকে বা সেই ব্যক্তি যদি অসুস্থবোধ করেন, তাহলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধা দিতে হবে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ছাড়া প্রত্যেকটি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে একটা মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্ট রাখতে হবে, ডিটেইল তথ্য থাকতে হবে। কাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কী অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কোন আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কে গ্রেপ্তার করেছে বিস্তারিত সেখানে থাকতে হবে। 

তিনি বলেন, আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন এজেন্সি গ্রেপ্তার করতো। গ্রেপ্তার করে বলতো ‘আমরা জানি না’ । র‍্যাব গ্রেপ্তার করে বলতো ‘পুলিশ জানে’, পুলিশ গ্রেপ্তার করে অন্য আরেক সংস্থার নাম বলতো। আমরা আইনে বলেছি- যেই সংস্থাই গ্রেপ্তার করুক তাদের সংশ্লিষ্ট অফিসে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির সব তথ্য সেখানে থাকতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে। আমরা আরও বলেছি, নিয়মিতভাবে প্রত্যেক থানায়, জেলা সুপারের কার্যালয়ে, পুলিশ হেড কোয়ার্টারে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের তালিকা থাকবে। এগুলো সব বাধ্যতামূলক।’