বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে খেলবে—স্বপ্নেও ভাবেননি ঋতুপর্ণা

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইতিহাস গড়ার নেপথ্যে বড় অবদান রেখেছেন তরুণ ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা। এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেওয়া এই সাফল্য যেন এখনো স্বপ্নই মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। ইয়াঙ্গুন থেকে পাঠানো ভিডিও বার্তায় নিজের আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলেন এই প্রতিভাবান ফুটবলার।
ঋতুপর্ণা বলেন, “এই আনন্দটা ভাষায় বোঝানো সম্ভব না। আমরা যখন নিশ্চিত হলাম যে এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছি, এটা ছিল কল্পনার বাইরে। বহু কষ্ট আর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই অর্জন এসেছে—এটা আমাদের জন্য বিশাল গর্বের বিষয়।”
শুধু ঋতুপর্ণাই নন, দেশের অনেক ফুটবল ভক্তের কাছেই এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্ন ছিল দূরতম ভাবনার বাইরে। কিন্তু সেই অকল্পনীয় স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে পিটার বাটলারের শিষ্যরা। বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ ড্র হওয়ার পরপরই মিয়ানমারকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই মূল পর্ব নিশ্চিত করে বাংলাদেশ নারী দল।
বাছাইপর্বে বাহরাইনের বিপক্ষে ৭-০ ব্যবধানে দারুণ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে একটি গোল করেছিলেন ঋতুপর্ণা। এরপর মিয়ানমারের বিপক্ষে তাঁর জোড়া গোল দলকে এনে দেয় ঐতিহাসিক জয়। এবং তুর্কমেনিস্তান ও বাহরাইন ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র হওয়ায় সময়ের আগেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশ দলের মূল পর্বে উত্তরণ।
এত বড় অর্জনের পরও দল এখনো উদ্যাপন করেনি। কারণ, হাতে আছে আরেকটি ম্যাচ। ঋতুপর্ণা বললেন, “আমরা এখনো উদ্যাপন করিনি। আমাদের সামনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। আমরা সেটি শেষ করে তারপর উদ্যাপন করব।”
এই সাফল্যের দিনে পরিবারের কথা ভুলে যাননি ঋতুপর্ণা। ম্যাচ শেষে মা-কে ফোন করেছিলেন আবেগে ভাসা এই ফুটবলার। তিনি বলেন, “জয়ের পর আমি মাকে ফোন করেছিলাম। মা একটু অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু যখন শুনলেন আমি দুটি গোল করেছি, তখন খুশিতে বললেন—তাঁর শরীরেই আর কোনও অসুস্থতা অনুভব করছেন না!”
উল্লেখ্য, আগামীকাল তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যদিও তারা এর আগেই মূল পর্ব নিশ্চিত করেছে, তবে মেয়েদের লক্ষ্য গ্রুপপর্ব শেষ করাও জয় দিয়ে।
আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে এএফসি নারী এশিয়ান কাপের ২১তম আসর। আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। বাছাইপর্ব থেকে প্রথম দল হিসেবে বাংলাদেশ পা রাখল এই মর্যাদাপূর্ণ আসরে। বাকি সাত গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো মূল পর্বে যোগ দেবে বাংলাদেশের সঙ্গে।