কেরানীগঞ্জে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা চুরি, নাইটগার্ডসহ গ্রেপ্তার ৩

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঈদুল আজহার ছুটির সময় আইএফআইসি ব্যাংকের একটি উপশাখা থেকে ভল্ট ভেঙে ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ব্যাংকের নাইটগার্ডসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চুরি যাওয়া পুরো টাকাই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চুরি ঘটনায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন—ব্যাংকের নাইটগার্ড মো. সিয়াম (২১), তার সহযোগী আল আমিন হাওলাদার (৩০) এবং ইমরান শেখ (২৬)।
পুলিশ জানায়, সোমবার (৯ জুন) গভীর রাতে কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর বোর্ডিং মোড় এলাকার ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত আইএফআইসি ব্যাংকের ওই শাখায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র ভল্ট ভেঙে অর্থ চুরি করে। পরদিনই ঢাকা জেলা দক্ষিণ ডিবি ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তিন আসামিকে আটক করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইলিয়াস হোসেন এবং ডিবি দক্ষিণ বিভাগের এসআই টিটুল আহমেদ। অভিযানে সিয়ামের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, আল আমিনের বাসা থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার এবং ইমরানের বাড়ি থেকে পাওয়া যায় ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। মোট উদ্ধারকৃত অর্থ ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এছাড়া চুরির সময় ব্যবহৃত গ্রাইন্ডিং মেশিন, লোহার শাবল, চাকু, সিসিটিভি ডিভিআর ডিভাইস এবং হার্ডডিস্কও জব্দ করেছে পুলিশ।
ওসি মনিরুল হক জানান, ঈদের ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ ছিল। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চক্রটি ব্যাংকের পেছনের দেয়ালের ওয়াশরুম অংশে থাকা অ্যাডজাস্ট ফ্যান ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। প্রবেশের পর প্রথমেই তারা সিসিটিভি ক্যামেরার তার কেটে দেয়, যাতে তাদের চিহ্নিত করা না যায়। এরপর ভল্ট ভেঙে তারা টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়।
চুরির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে নজরে আসে নাইটগার্ড সিয়াম। শুরুতে তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি ব্যাংকের বাইরে অবস্থান করছিলেন এবং চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তবে তার বক্তব্যে অসামঞ্জস্য ধরা পড়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে সে চুরির পরিকল্পনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুরির ঘটনায় ব্যাংক ম্যানেজারের ভূমিকাও সন্দেহের বাইরে নয়। গ্রেপ্তারকৃতদের ঢাকা ডিবি কার্যালয়ে এনে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। চক্রটির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্তাধীন।