ট্রাম্প-জিনপিং ফোনালাপ: টিকটক ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৯:১৫ অপরাহ্ণ
 0
ট্রাম্প-জিনপিং ফোনালাপ: টিকটক ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে টেলিফোন আলাপ হয়েছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই কথোপকথনে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নীতি ও টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি ও শিনহুয়ার খবরে বলা হয়, দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে ট্রাম্পের দ্বিতীয় ফোনালাপ। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি, তবে কূটনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে—চূড়ান্ত টিকটক চুক্তি, শুল্কনীতি এবং সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকই আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল।

ফোনালাপের আগের দিন (১৮ সেপ্টেম্বর) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, “টিকটক ও বাণিজ্য নিয়ে চুক্তির খুব কাছাকাছি আমরা পৌঁছে গেছি। শি’র সঙ্গে আমার সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো।”

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন ট্রাম্প জানিয়েছিলেন—শি তাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পাল্টা আমন্ত্রণ হিসেবে ট্রাম্পও শি’কে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আহ্বান জানান। যদিও এখনো কোনো সফরের তারিখ নির্ধারিত হয়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সর্বশেষ ফোনালাপে শি জিনপিং আবারও ট্রাম্পকে বেইজিং সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালেই। তবে তার দ্বিতীয় মেয়াদে বিষয়টি দুই দেশের সম্পর্কের অন্যতম বড় ইস্যুতে পরিণত হয়। সম্প্রতি মাদ্রিদে বৈঠকের সময় মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও চীনের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী লি চেংগ্যাং টিকটক বিক্রির বিষয়ে একটি প্রাথমিক কাঠামোতে সম্মত হয়েছেন।

প্রস্তাব অনুযায়ী, টিকটকের অন্তত ৮০ শতাংশ শেয়ার মার্কিন বিনিয়োগকারীদের হাতে যাবে এবং বাকি ২০ শতাংশ রাখবেন চীনা অংশীদারেরা। ওরাকল, আন্দ্রেসেন হোরোভিৎজ ও সিলভার লেকসহ কয়েকটি মার্কিন প্রযুক্তি ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি এতে বিনিয়োগ করবে। নতুন বোর্ডেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষের সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন এবং প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্ত থাকবেন।

২০২৪ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে পাস হওয়া দ্বিদলীয় আইনে বলা হয়েছিল—টিকটককে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হলে অন্তত ৮০ শতাংশ মালিকানা মার্কিন হাতে থাকতে হবে। যদিও আইন কার্যকরের আগে ট্রাম্প একাধিকবার সময় বাড়িয়ে দেন এবং বিকল্প সমাধানের চেষ্টা করেন।

প্রথমে বাইটড্যান্স তাদের শেয়ার ছাড়তে অনাগ্রহী থাকলেও সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও ওয়াশিংটনের চাপের কারণে কিছুটা নরম অবস্থান নিয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন, আসন্ন অক্টোবর মাসে ট্রাম্প এশিয়া সফরে গেলে শি’র সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে পারে।

হোয়াইট হাউস এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘোষণার আগে সব তথ্য অনুমান হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। তবে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন—টিকটক চুক্তি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে মার্কিন বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি সম্পদশালী প্রতিষ্ঠান।

এদিকে বাণিজ্য ইস্যুতে দুই দেশ এখনো শুল্ক নির্ধারণে সমঝোতা খুঁজছে। চলতি বছরের শুরুতে উভয় দেশ একে অপরের ওপর শুল্ক বাড়ালে এর প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।