জুলাই আন্দোলনে ছিল সচেতন শিক্ষকদের দ্বিধাহীন উচ্চারণ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যা এক সময় হয়ে ওঠে একটি প্রজন্মের আত্মপরিচয়ের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে কিছু শিক্ষক হয়ে ওঠেন সাহসের বাতিঘর। যাদের দ্বিধাহীন- প্রতিবাদী কণ্ঠে ভরসা জাগে সাধারণের বিবেকে। তেমনি দুইজন শিক্ষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা।
অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, আমার একটা বোধের জায়গা ছিল, ছাত্রদের ওপর চলমান এ হত্যাকাণ্ড, এ নৃশংসতা থামাতে হলে অবশ্যই দেশের আপামর জনসাধারণকে রাস্তায় নামতে হবে। ফলে আমি ঘৃণা প্রদর্শন করেছিলাম কবি নবারন ভট্টাচার্যের কবিতার ভাষায়। তাদেরকে যারা নিরব ছিল।
সেদিন বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠ উঁচিয়ে বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের বুকে আর গুলি নয়। তবে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন তার মতো শিক্ষকেরা, তা যেনো এখনও অধরা।
তিনি আরও বলেন, একটা দানবীয় শক্তিকে আমরা উৎখাত করতে পেরেছি। কিন্তু তার মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে গুনগত পরিবর্তন আশার কথা ছিল, রাজনৈতিক ব্যবস্থায় যে গুনগত পরিবর্তন আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম সেটি অর্জিত হয়নি।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহসী শিক্ষকদের কাতারে আরেক নাম অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। যখন ছাত্রজনতার রক্তে রঞ্জিত রাজপথ, তখন শোষকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজ কার্যালয় থেকে সরিয়ে ফেলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। ওই ঘটনার পর তাকে পড়তে হয়েছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের রোষানলে।
এই অধ্যাপক বলছেন, ১৬ বছরে পেশাজীবীদের মাঝে গেড়ে বসা ভয়ের শৃঙ্খল ভাঙাটা অত সহজ ছিল না। তবে, সংখ্যায় অল্প হলেও সেই ঝুঁকিটা নিয়েছেন তার মতো শিক্ষকেরা।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে নারীদের প্রতি যে ধরনের নৃশংসতা চালানো হয়েছে, নানান জায়গায় শিক্ষকদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, এগুলো আমাদের মনে বেদনা জাগায়।
এই শিক্ষকেরা মনে করেন, কেবল ক্লাসরুমের চার দেয়ালে পাঠদান করাই শিক্ষকের একমাত্র দায় নয়। বরং, রাষ্ট্র ও সমাজের কাছে দেনাটাও পরিশোধ করতে হয় সময়মতো।