বন্ধুদের জন্য আজকের বিশেষ দিন, যেভাবে শুরু হয়েছিল ‘বন্ধু দিবস’ পালন

চলতি জীবনের ব্যস্ততায় যে মানুষগুলো সব সময় পাশে থাকে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে অনন্য সেই মানুষটিই বন্ধু। বন্ধুত্ব এই শব্দটির মধ্যেই যেন লুকিয়ে আছে নির্ভরতা, নির্জনতার সঙ্গী এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক অপূর্ব সংজ্ঞা। জীবনের নানা ওঠানামায় পাশে থাকার যে অদৃশ্য প্রতিশ্রুতি, তারই নাম বন্ধুত্ব। আর এই সম্পর্ককে উদ্যাপন করতেই প্রতিবছর পালিত হয় ফ্রেন্ডশিপ ডে বা ‘বন্ধু দিবস’। কিছু দেশ যেমন জাতিসংঘ নির্ধারিত ৩০ জুলাইয়ে দিনটি পালন করে, তেমনই বাংলাদেশসহ অনেক দেশে এটি পালন করা হয় আগস্ট মাসের প্রথম রোববার। চলতি বছর বিশ্বজুড়ে ৩ আগস্ট পালিত হচ্ছে বন্ধু দিবস।
এরপর, ১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকো শহরে বন্ধুদের সঙ্গে রাতের খাবারের সময় ড. র্যামন আর্তেমিও ব্রাচো “বিশ্ব বন্ধু দিবস” পালনের প্রস্তাব দেন। তার উদ্যোগেই গঠিত হয় ‘ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডে’। এটি একটি সংস্থা যার লক্ষ্য ছিল জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলা। এই প্রচেষ্টার ফলেই ৩০ জুলাই দিনটি প্যারাগুয়ে এবং পরে বিশ্বের বহু দেশে বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু করে। ২০১১ সালে, জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ জুলাইকে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
কেন আগস্টের প্রথম রোববার: যদিও জাতিসংঘ ৩০ জুলাই নির্ধারণ করেছে, তবুও ভারত, বাংলাদেশ, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ ও কিছু পশ্চিমা দেশে আগস্টের প্রথম রোববারে দিনটি উদ্যাপন করা হয়। এটি মূলত ১৯৯০ দশকে স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্ব দিবসকে জনপ্রিয় করে তোলে। এ দিন বন্ধুকে ফ্রেন্ডশিপ দেয়া, উপহার বিনিময়, একসঙ্গে সময় কাটানো, এবং ছোট ছোট সারপ্রাইজ পার্টির মধ্য দিয়ে দিনটি রঙিন হয়ে ওঠে।
বন্ধুত্ব একটি সম্পর্ক নয়, বরং এটি একধরনের মানবিক বন্ধন, যা সমাজে শান্তি ও সহানুভূতির বার্তা পৌঁছে দেয়। জাতিসংঘ বন্ধু দিবসের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক বার্তা ছড়াতে চায়, যাতে বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি গড়ে ওঠে। বন্ধুত্ব দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়সফল জীবন মানেই শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সেইসব মুহূর্তও যখন একজন বন্ধু পাশে থেকেছে। জীবনের দুঃখ-সুখে যেসব মুখ আমাদের পাশে থাকে, তাদের সম্মান জানানোর জন্য এই দিনটিই হতে পারে সবচেয়ে সুন্দর উপলক্ষ।