হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ৮৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগ, সাক্ষী ৮১

২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব ‘মনসুন রেভুল্যুশন’ বা ‘বর্ষা বিপ্লব’ চলাকালে সংঘটিত ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রোববার (১ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো আলোচিত মামলা ‘চিফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনা গং’।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, মামলায় তারা যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করবেন, তার মধ্যে রয়েছে- প্রত্যক্ষদর্শী ও জীবিত ভিকটিমদের সাক্ষ্য, ভিডিও ও অডিও ক্লিপস, সিসিটিভি ও ড্রোন ফুটেজ, ফরেনসিক বিশ্লেষণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী, সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যচিত্র, আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট এবং সরকারি ডকুমেন্টস।মামলার অন্যান্য দুই অভিযুক্ত হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, এই তিনজনের বিরুদ্ধে রয়েছে গণহত্যা, নির্বিচার হত্যা, উসকানি ও সহিংসতায় প্ররোচনার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে উদ্ভূত হয় ব্যাপক ছাত্র-যুব আন্দোলন। কোটা সংস্কার, বৈষম্য ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আয়োজিত এ আন্দোলন ‘বর্ষা বিপ্লব’ নামে পরিচিতি পায়। অভিযোগ রয়েছে, এই আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়ঙ্কর অপব্যবহার করা হয়, যার ফলে শত শত মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হন, সহিংসতার শিকার হন হাজারো নিরীহ নাগরিক।
আন্তর্জাতিক মহলেও এ ঘটনাগুলো ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইন ও বাংলাদেশের ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের আওতায় এ বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে এতো বড় পরিসরের অভিযোগপত্র এর আগে কখনো দাখিল হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে মোট ৮১ জনকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনের সময় আহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজন, চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক সদস্য এবং তদন্ত কর্মকর্তারা। এর আগে ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা, যার ভিত্তিতে প্রস্তুত হয় অভিযোগপত্র।