গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ফের যুদ্ধবিরতির শর্তহীন আলোচনা

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার মধ্যেই শনিবার কাতারে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে ফের শর্তহীন আলোচনা শুরু করেছে ইসরায়েল ও ভূখণ্ডটির শাসকগোষ্ঠী হামাস। দুই পক্ষই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
'গিদিয়নের ক্যারিয়ট অভিযান': ইসরায়েল জানায়, তারা গাজায় আরও ভূমি দখলের উদ্দেশে নতুন অভিযান 'অপারেশন গিদিয়নের ক্যারিয়ট' চালু করছে। এই ঘোষণা এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের পরপরই। মার্চের শুরু থেকেই ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের সরবরাহ প্রবেশ বন্ধ রেখেছে, যার ফলে সাড়ে ২৩ লাখ বাসিন্দার মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার সীমানার কাছে ইসরায়েলি ট্যাংক জড়ো হতে দেখা গেছে। গাজার ভেতরে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল থেকে মানুষজন তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঠেলা গাড়িতে তুলে পালিয়ে যাচ্ছে।
একজন অধিবাসী, ৫০ বছর বয়সী ইমাদ নাসির বলেন, 'ওরা বাড়ি-ঘর বোমা মেরে উড়িয়ে দিচ্ছে, আর মানুষ আতঙ্কে। আমরা করবই বা কী? ওরা আমাদের মানুষ মনে করে না, পশুর মতো আচরণ করছে।'
হামাসের শীর্ষ নেতাদের মিডিয়া উপদেষ্টা তাহের আল-নোনো রয়টার্সকে জানান, শনিবার (১৭ মে) কাতারে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে নতুন দফার পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে, এবং সব বিষয় নিয়ে ‘কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া’ আলোচনা হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন,'হামাসের প্রতিনিধি দল তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে—যুদ্ধ বন্ধ করা, বন্দি বিনিময়, ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তা ও জনগণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী গাজায় প্রবেশের অনুমতির ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক বিবৃতিতে বলেন, কাতারে হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা আবারও শুরু হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই আলোচনা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি বা অবরোধ প্রত্যাহারের কোনো প্রতিশ্রুতি ছাড়াই শুরু হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজার কিছু অংশে 'কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাপক হামলা ও সেনা মোতায়েন চালিয়ে যাচ্ছে।