গরমে আখের রস খাওয়া কী ভালো না ক্ষতি, যা বলছেন পুষ্টিবিদ

তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। অসহনীয় গরমে নাজেহাল জনজীবন। বাসা-বাড়ির বাইরে অবস্থানের সময় ঠান্ডা পানি কিংবা কোমাল পানীয় পান করা হয়। কেউ কেউ আবার রাস্তার পাশে টং দোকানে থাকা রকমারি শরবত বা আখের রসে গলা ভিজিয়ে নেন। আখের রসেই অনেকে ভরসা বেশি পান। কারণ, এতে খুব একটা ভেজাল মেশানোর আশঙ্কা থাকে না।
গরমে প্রচুর পরিমাণ তরল পানের কথা বলে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি মৌসুমী ফলমূলও খাওয়ার কথা বলা হয়। মূলত শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ এবং ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমানোর জন্যই এসব খাওয়ার কথা বলা হয়। এরইমধ্যে অনেকেই আবার ভরসা রাখেন সেই আখের রসে।
গরমে আখের রস খাওয়ার ব্যাপারে তিনি জানিয়েছেন, এই রস পুষ্টিকর হলেও এর কিছুটা ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আখের রসে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে থাকে। অর্থাৎ, ডায়াবেটিস থাকলে এই রস একদমই খাওয়া যাবে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের ডায়াবেটিস নেই তারা কী আখের রস খেতে পারবেন? এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ অরিজিৎ জানিয়েছেন, আখের রস রক্তকে পাতলা করে দিতে পারে। আবার অনেক সময় কোলেস্টেরলের মাত্রাও বৃদ্ধি করে দিতে পারে। এই রস মেটাবলিক ডিসঅর্ডার ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে থাকে।
এছাড়া তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক, হিট এগজশনের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে রোদের সময় বের হলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবের মতো নানা উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। এ অবস্থায় আখের রস খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এ ব্যাপারে এই পুষ্টিবিদ বলেন, আখের রসে পরিকোসানল নামের এক ধরনের দীর্ঘ চেইন অ্যালকোহল রয়েছে। যা আপনার অনিদ্রা, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও পেট খারাপের কারণ হতে পারে। এ জন্য গরমের সময় আখের রস খেলে এ ধরনের নানা সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
আখের রস হচ্ছে এক ধরনের প্রাকৃতিক টনিক। যা পানের পর রিফ্রেশিং ও শক্তি জোগাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কিন্তু রাস্তার আশপাশে যেভাবে খোলা পরিবেশে আখের রস বিক্রি করা হয়, তা খেলে উপকারের সম্ভাবনা নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে আখের রস তৈরি করতে হবে।
এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ অরিজিৎ বলেন, আখের রস অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় যদি খোলা পরিবেশে তৈরি করা হয়, তাহলে তাতে জীবাণু বেশি থাকার ঝুঁকি থাকে। ফলে পেটের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবে মাঝে মধ্যে দু-এক গ্লাস খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কখনো খালি পেটে না খেয়ে খাওয়ার অন্তত ১-২ ঘণ্টা পর খেলে উপকার মিলে। লেবুর রস, আদা ও পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেলে বেশি ভালো।