তৈরি পোশাক খাতে শক্তি রূপান্তরের নতুন চ্যালেঞ্জ

জ্বালানির বিশ্ববাজারে অস্থিরতা, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি এবং বৈশ্বিক বাজারে টেকসই উৎপাদনের চাপ—এই তিনটি চ্যালেঞ্জের মাঝেই নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। শক্তির রূপান্তর এখন আর কেবল পরিবেশ সচেতনতার বিষয় নয়, বরং হয়ে উঠেছে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পূর্বশর্ত। এ প্রেক্ষাপটে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে নীতিগত কাঠামো কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
দেশজুড়ে লিড সনদপ্রাপ্ত প্রায় আড়াইশ কারখানায় সৌর ব্যবস্থা চালু হয়েছে, যা কিছুটা হলেও কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে বিদ্যুৎ সংকটে। তবে এই সংখ্যা এখনও অনেকটাই কম।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, যে কোনো কারখানায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি অবশ্যই লাভজনক। তবে কিছু কিছু বাধা রয়েছে, যেমন-নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপাদানগুলোর ওপর উচ্চ কর আরোপ করা আছে। আমি পরিবেশের ক্ষতি করছি না, যেখানে আমাকে ভর্তুকি দেয়ার কথা সেখানে উল্টো ৩০ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত কর ধার্য করেছে।
বিশ্বব্যাপী পরিবেশের জন্য এখন বড় সমস্যা অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ। অবশ্য তাতে বাংলাদেশের অবদান শূন্যের কোটায়। অন্যদিকে, সারাবছর যতটুকু কার্বন নিঃসরণ হয়, তার অন্তত ১৫.৪ শতাংশের জন্য দায়ি পোশাক খাত। তাই তা কমাতে চাপ রয়েছে বৈশ্বিক ক্রেতাদের।
সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মো. শামসুদ্দোহা বলেন, জাতীয় একটি গাইড লাইন থাকা উচিৎ। আমরা রেডিমেট গার্মেন্টেস থেকে প্রচুর আয় করতে পারি। এটা যদি ট্রানজিশনে যায়, কোন কোন জায়গায় ট্রানজিশন হলে, কি কি পরিবর্তন দরকার তা যদি মূল্যায়ন করতে পারি তাহলে বুঝতো পারবো আমাদের রোডম্যাপ দরকার।
গবেষকরা বলছেন, শক্তির এই রূপান্তর শুধু পরিবেশ নয়, অর্থনৈতিক বিচারেও গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘জিরো কার্বন’ নীতি মাথায় রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ।
আগ্রহ থাকার পরও চড়া আমদানি শুল্ক এবং যথাযথ নীতির অভাবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করতে অনেকে দ্বিধায় পড়ছেন। এজন্য আমদানি শুল্ক কমানোসহ শিল্পবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আহ্ববান জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।