নিষেধাজ্ঞার খবরে আকাশছোঁয়া ইলিশের দাম
ইলিশের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়তেই ইলিশের দাম বেড়ে আকাশছোঁয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে মতলব উপজেলার বিভিন্ন বাজার—মতলব বাজার, নারায়নপুর, মুন্সিরহাট ও নায়েরগাঁও ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের অতিরিক্ত দামে ক্রেতাদের মধ্যে বিরক্তি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, “দিন শেষ হলেই নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। সাগরের সব নৌকা ইতিমধ্যেই ঘাটে চলে এসেছে। কিন্তু দাম এখনো অনেক বেশি।”
অন্য এক ক্রেতা শাহনাজ বেগমের মন্তব্য, “ইলিশের দাম এখন যেন সোনার মতো। মৌসুম থাকা সত্ত্বেও দামে কোনো কমতি নেই। ইচ্ছা থাকলেও এখন আর সহজে ইলিশ খাওয়া যায় না।”
বাজারে ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের ইলিশই পাওয়া যাচ্ছে, তবে দামের লাগাম টানার কোনো লক্ষণ নেই। মাঠপর্যায়ে সরেজমিনে জানা গেছে—
-
ছোট সাইজের (প্রায় ২০০ গ্রাম ওজনের) প্রতিহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০–৭০০ টাকা দরে।
-
মাঝারি সাইজের (৮০০–৯০০ গ্রাম) ইলিশের দাম প্রতি কেজিতে ২২০০–২৫০০ টাকা।
-
বড় সাইজের (১.২–১.৫ কেজি ওজন) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৫০০–৪০০০ টাকা পর্যন্ত।
মতলব বাজারের মাছ ব্যবসায়ী চৈতন্য দেব ও সুকুমার দাস জানান, “এ মৌসুমে ইলিশের সরবরাহ কিছুটা থাকলেও তাজা বড় সাইজের মাছের চাহিদা বেশি। আমরা উচ্চমূল্যে কিনছি বলেই বিক্রির দামও বেশি রাখতে হচ্ছে।”
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের এই বিশেষ অভিযানে নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা, পরিবহন, বাজারজাত ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় প্রচার কার্যক্রম চলছে।
অভিযানকালীন সময়ে জেলেদের সহায়তায় প্রতি পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। পাশাপাশি নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করবে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে—দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।