জুলাই আন্দোলনের বড় শক্তি নারী শিক্ষার্থী: নানা অপূর্ণতার মধ্যেও নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন

সম্মুখ সারিতে গগণবিদারী শ্লোগান, স্বৈরাচার বাহিনীর নির্যাতনের মুখে ছাত্রদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ানো কিংবা বন্দুকের নলের মুখে অকুতোভয়। চব্বিশের উত্তাল জুলাইয়ে চট্টগ্রামে আন্দোলনের বড় শক্তি হয়ে উঠেন, নারী শিক্ষার্থীরা। মানুষের কাছে তারা পরিচিত পেয়েছিলেন অগ্নিকন্যা হিসেবে। নানা অপূর্ণতার মধ্যেও যারা এখনও আশায় বুক বেঁধে আছেন, একটি বৈষম্যহীন দেশের।
নারী শিক্ষার্থীরা বলেন, চট্টগ্রাম একটা কনজারভেটিভ এলাকা এখানে নারীদের গায়ে হাত তোলার আগে বা নারীদের আঘাত করার আগে এরা একবার না দশবার ভাবে। সেই চিন্তা চেতনা থেকেই আমরা সামনের সারিতে একটা রক্ষাবলয় হিসেবে দাঁড়িয়েছিলাম। এর ফলে তারা সামনের থেকে হামলা না করে কাপুরুষের মতো পিছন থেকে হামলা করে।
তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ও ছাত্রলীগ তার বাহীনিকে কাজে লাগিয়ে যে গণহত্যা চালিয়েছে পরম্পরাক্রমে এই ঘটনাগুলো মানুষকে ভীষণভাবে আলোড়িত করেছে। এরশাদের পতন হয়েছে, আইয়ুভ খানের পতন হয়েছে, কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার পালিয়েই যেতে হয়েছে।
একটা সময়, বন্দরনগরীতে এই মেয়েরাই যেন হয়ে উঠেন আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। কখনো কখনো ছাত্রদের অনুপস্থিতিতে হাল ধরেছেন আন্দোলনের। তাদের দুর্দমনীয় সাহসের স্ফুলিঙ্গে সেদিন অবাক বিস্ময়ে দেখে চট্টলার মানুষ।
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, যখন আমার নাম সমন্বয়ক লিস্টে আসে এবং এক নাম্বারে ছিল। তারপর আমাকে বলা হয়েছে বাসা থেকে চলে যেতে, আমি প্রতিদিন ঘর থেকে এই বলে বেড়াতাম আজকের পর আমি ঘরে আর নাও ফিরতে পারি।
বছর ঘুরে, ফিরে এসেছে রক্তাক্ত জুলাই। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে জীবনবাজি রেখেছিলেন সেটাই বা কতটা ধরা দিল?
শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন বাবা তার সন্তানের লাশ ধরে বলতেছে আমাকে ছেড়ে কোথায় গেলি বাবা। সেই বাবাকে আমরা এখনো উত্তর দিতে পারিনি। আমরা একটা সময় ছাত্রলীগকে দেখেছি, দেশে আর কোনো ছাত্রলীগ তৈরি হোক তা আমরা চাই না। আমরা দেখেছি ৫ আগস্টের পর সবাই কথা বলতে পারছিল, তার মতামত রাখতে পারছিলো, কিন্তু আস্তে আস্তে সেটা কমে যাচ্ছে। আমরা অপরাধীদের এখনো বিচার করতে পারিনি।
নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য বিলোপ হোক, সব মানুষ মাথা উঁচু করে বাঁচুক, আর কখনো মাথাচাড়া দিতে না পারুক নতুন স্বৈরতন্ত্র এটুকুই শুধু চাওয়া এই জুলাইকন্যাদের।