হাসিনা যে অপরাধ করেছে তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও জঘন্য: আইন উপদেষ্টা

শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, সেরকম জঘন্য অপরাধ ১৯৭১ সালেও পাকিস্তানি বাহিনীও করেনি বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউটের মিলনায়তনে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা বিভিন্ন প্রত্যাশার কথা, বেদনার কথা বলেন, মাঝে মাঝে একটু দুঃখ লাগে। আজকে তাজুল (চিফ প্রসিকিউটর) কিছু কথা বলল যে আমরা কীভাবে কাজ করি। আমি আপনাদের বলতে পারি, তাজুল কীভাবে কাজ করে। তাজুল রাত ২টা পর্যন্ত কাজ করে, একটা নতুন কিছু হলে চকচকে চেহারা করে আইন মন্ত্রণালয়ে দৌড়া আসে, স্যার ওরকম একটা এভিডেন্স পেয়েছি। এই যে ইমোশন এই যে পরিশ্রম, এই যে কষ্ট এই পুরা টিম করছে। আমরা লেগে আছি।
আসিফ নজরুল ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, তাজুলের সঙ্গে দেখা হলে প্রথম কথা, আমরা নিজের কাছে নিজে মুখ দেখাতে পারবো না, আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারবো না। বারবার একটা কথাই বলি, বিচার কত ভালোভাবে করা যায়, কতটুকু করা যায়। তারপরও অনেক অভিযোগ শুনি, অনেক কিছু শুনি, খুব দুঃখ লাগে মাঝে মাঝে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এটার জন্যই তো আমাদের সন্তানরা প্রাণ দিয়েছিল, আপনারা আমাদের প্রশ্ন করবেন, সমালোচনা করবেন। কষ্ট লাগলো, শুনবো আবার রিফোকাস করবো। কিন্তু আপনাদের একটা জিনিস বলতে চাই, আমি একজন রিলিজিয়াস মানুষ আমি যখন নামাজ পড়ি বা যখন আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, সবসময় বলি আমি যেন আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারি। আমি যখন জায়নামাজে যাই, দোয়া পড়ি তখন মনে হয় যে আল্লাহ তো আমাকে দেখছে। আমি কি আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারবো? উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আপনাদের কনফিডেন্টলি বলে যাই, ওপরে আল্লাহ আছে। অবশ্যই পারবো।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এসব দৃশ্য দেখলে, যতবার দেখি যতবার দেখি মাথায় আগুন চেপে দেয়, আর চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে। আমি আন্তর্জাতিক আইন পড়েছি ল’য়ের স্টুডেন্ট হিসেবে। যুদ্ধক্ষেত্রে আপনার শত্রু যদি আনআর্মস থাকে, তার হাতে যদি কিছু না থাকে, যুদ্ধক্ষেত্রে আপনি তাকে গুলি করতে এলাউড না। গুলি করলে আপনি যুদ্ধাপরাধ করবেন। যুদ্ধক্ষেত্রে যদি একজন গুলি খেয়ে আহত হয়ে পড়ে থাকে, তারপর আপনি তাকে গুলি করতে এলাউড না। কারণ এটা যুদ্ধাপরাধ। যুদ্ধের ময়দানে আপনি আহত লোককে যদি চিকিৎসা না দেন, সেটা যুদ্ধাপরাধ। যুদ্ধের ময়দানে আপনি যদি ডেডবডি পুড়িয়ে ফেলেন, এটা যুদ্ধাপরাধ।