ফেনীতে বাঁধ নির্মাণে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় সরকারের

ফেনীতে চলমান বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক জানিয়েছেন, মুহুরী নদীতে বাঁধ নির্মাণে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করার বিষয়ে সরকার ভাবনা-চিন্তা করছে।
শনিবার (১২ জুলাই) ফেনীর পরশুরাম ও কাজী এলাকায় বন্যাকবলিত অঞ্চল পরিদর্শনের সময় তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলেও, তার পরবর্তী সংকট মোকাবেলায় সরকার সদা প্রস্তুত রয়েছে। মুহুরী নদীর বন্যা প্রতিরোধে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার একটি বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে সময় লাগবে, একদিনে এর সমাধান সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, সড়ক ও অন্যান্য অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।
এক স্থানীয় সাংবাদিক সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে এসে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের মেয়াদ খুব কম সময়ের জন্য বাকি আছে। এত স্বল্প সময়ে এত বড় প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা বাস্তবসম্ভব নয়।” তিনি আরও জানান, “গত বছরের বন্যায় ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, কিন্তু এ বছর এখনো কোনো মৃত্যুর খবর নেই। এটাই সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।”
ত্রাণ বিতরণ ও বাঁধ নির্মাণ বিষয়ে তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন, ত্রাণ না দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হোক। আমরা উভয় দিকেই কাজ করবো। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন এবং জীবিকার কোনো সুযোগ নেই, তাদের ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করা জরুরি।”
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে ফেনী সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় উপদেষ্টা বলেন, “গত বছরের বন্যায় পুরো দেশের মনোযোগ ফেনীর দিকেই ছিল। মানুষের মধ্যে একতা ও সহযোগিতার অসাধারণ নজির আমরা তখন দেখেছিলাম। এ দেশের মানুষ সবসময় সম্মিলিতভাবে দুর্যোগ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে।”
বন্যাকবলিত অঞ্চল পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন, ফুলগাজী ইউএনও ফাহরিয়া ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।