মাহিনের ৫ দিন, রবিনের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
পুরান ঢাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী খুন

রাজধানীর পুরান ঢাকার ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান মাহিন ও তারেক রহমান রবিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (১১ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানা এই আদেশ দেন। শুনানিতে তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের মামলায় মাহিনের জন্য ১০ দিনের এবং অস্ত্র আইনে রবিনের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন প্রার্থনা করে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মাহিনের পাঁচদিন এবং রবিনের দুই দিনের রিমান্ড অনুমোদন করেন।
এর আগে, গত ৯ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় নির্মম এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোহাগকে পরিকল্পিতভাবে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রকাশ্যেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পরদিন নিহতের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাম উল্লেখ করে ১৯ জন এবং আরও ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকায় ভাঙারি ব্যবসার পাশাপাশি পুরাতন বৈদ্যুতিক কেবল, তামার তার ও সাদা তারের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ওই এলাকায় বিদ্যুতের তারের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট রয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন সোহাগ। কিন্তু একই নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল মাহিন ও টিটু নামের আরও দুই ব্যক্তি। তারা সোহাগের ব্যবসার ৫০ শতাংশ ভাগ চায় এবং নিয়মিত চাঁদা দেওয়ার দাবি করে। এখান থেকেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার দিন “সমঝোতার” কথা বলে সোহাগকে বাসা থেকে ডেকে এনে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর তার দেহ হাসপাতাল চত্বরে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে এনে শত শত পথচারীর সামনে উন্মত্ততা চালায়।
এই নৃশংস ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক সোহাগের নিথর দেহ টেনে আনে, একজন মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রক্তাক্ত মুখে কিলঘুষি মারছে, আরেকজন দৌড়ে এসে তার বুকের ওপর লাফ দিচ্ছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। পাশাপাশি, যুবদল এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই নেতাকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে।