জুলাইয়ে অঙ্গ হারানোর উপাখ্যান: পাওয়া-না পাওয়ার আক্ষেপে স্বপ্নের বাংলাদেশ ঘিরে সংশয়

৮ জুলাই ২০২৫ - ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ
 0
জুলাইয়ে অঙ্গ হারানোর উপাখ্যান: পাওয়া-না পাওয়ার আক্ষেপে স্বপ্নের বাংলাদেশ ঘিরে সংশয়

এক বছর আগে উত্তরার রাজপথেই ইতিহাস লেখা হয় রক্ত আর প্রতিরোধে। গুলির শব্দে থেমে যায় অনেক তরুণের স্বপ্ন। কেউ হারায় প্রিয়জন, কেউ শরীরের অঙ্গ। তেমনি এক তরুণ আতিকুল ইসলাম। হাসিনার পতনের পর গুলিবিদ্ধ হয়ে এক হাত হারান আতিক। এখন তার জীবন অনেকটাই স্বাভাবিক, তবে প্রতিশ্রুত বাংলাদেশ না পাওয়ার আক্ষেপ যেন এখনও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাকে। 

উত্তরার বাসিন্দা হিসেবে চিরচেনা পথ ধরে তিনি যতবার চলাচল করেন, ততবারই যেনো এক রক্তাক্ত স্মৃতি পেছনে থেকে আঁকড়ে ধরে তাকে। আতিকুল ইসলাম বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমি নিজের চোখে দেখিনি সেটাই তো ভুলে যাবার কোনো অপশন নেই। আর যে আন্দোলনে আমি নিজে ছিলাম, নিজে লড়াই করেছি, নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, আমার শত শত ভাইয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি, এটা আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলতে পারবো না। আমার এখনো রাতের বেলায় মনে হলেই চোখ দিয়ে পানি পড়ে। আমরা কি একটা সময় পার করেছি এই হাসিনাকে তাড়ানোর জন্য।

চব্বিশের পাঁচ আগস্টের বিকেলে যখন হাসিনার পতনের পর ছাত্রজনতার বিজয় মিছিলে আচমকা গুলি চালায় পুলিশ। তখন কি করছিলেন আতিক? জলজলে চোখে জবাবে বলেন, ‘রাস্তা থেকে একজনকে টেনে সরাচ্ছিলাম তখনই হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি। বুঝিনি তখন, নিজেরই গায়ে গুলি লেগেছে।’

একহাত বিহীন যাপিত জীবনে অভ্যস্থ হয়ে উঠছে আতিক। তবে, জনআকাঙ্খার বিপরীতে রাষ্ট্র ও রাজনীতির বদলে যাওয়ার নমুনা ক্লান্ত করে তুলছে তাকে।

তিনি বলেন, যার জন্য মানুষ জীবন দিলো, পঙ্গুত্ববরণ করল, রক্ত দিলো মানুষ তো সেই স্বস্তি পাচ্ছে না। মানুষ দেশ যেভাবে চেয়েছিল সেভাবে তো আগাচ্ছে না। যদি এভাবেই দেশ চলে তাহলে আমি বলবো এরপর কেউ আর রাজপথে নামবে না। 

উত্তরা আজ অনেকটাই নীরব। কিন্তু আতিকদের গল্প এখনো বাতাসে ভেসে বেড়ায় একই প্রশ্ন নিয়ে। সেই প্রতিশ্রুত ‘নতুন বাংলাদেশ’ আদৌ কি আসবে?