ভয়াবহ দুর্যোগে হিমাচল প্রদেশ, প্রাণহানি ৬৩ ছাড়াল

ভারতের হিমাচল প্রদেশে টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দুর্যোগের কবলে পড়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৩ জন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকেই। কয়েক ডজন মানুষকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) প্রকাশিত এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, রাজ্যের সব জেলাতেই আগামী সোমবার (৭ জুলাই) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা বহাল রয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত ২০ জুন থেকে হিমাচলে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশের পর থেকেই ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও প্রবল বৃষ্টিপাতে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু মান্ডি জেলাতেই ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কাংড়া জেলায় মারা গেছেন ১৩ জন, চাম্বায় ছয়জন এবং শিমলায় পাঁচজন।
বিশেষ করে মান্ডির থুনাগ ও বাগসায়েদ এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উক্ত এলাকাগুলো রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা জয়রাম ঠাকুরের নির্বাচনী এলাকা হিসেবে পরিচিত। এছাড়া মান্ডির কারসোগ ও ধর্মপুর অঞ্চলেও বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।
মান্ডি জেলা থেকেই কমপক্ষে ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলোর মধ্যে বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নৌর, কুল্লু, লাহুল স্পিতি, সিরমাউর, সোলান ও উনা থেকেও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন এক শতাধিক মানুষ।
হিমাচল প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্যোগে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মান্ডি জেলাজুড়ে চলছে তীব্র ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা।
রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং রাজস্ব বিভাগের বিশেষ সচিব ডিসি রানা বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব পেয়েছি। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি হয়তো আরও বেশি। বর্তমানে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্পূর্ণ মূল্যায়ন শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।”
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, শুধু হিমাচল নয়—গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড এবং ছত্তিশগড়সহ বর্ষণপ্রবণ অন্যান্য রাজ্যেও সহায়তা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। তিনি জানান, “দেশের একাধিক রাজ্যে অতিভারী বর্ষণের প্রেক্ষাপটে আমি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এনডিআরএফের পর্যাপ্ত দল ইতিমধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে, প্রয়োজনে আরও পাঠানো হবে।”