জুলাই হত্যাযজ্ঞ ছাড়িয়েছিল নিষ্ঠুরতার সব মাত্রা

জুলাই। শোষণ ও প্রতিরোধের রক্তাক্ত মাস। এই মাসেই মানুষের প্রাণ হয়ে উঠেছিল সবচেয়ে সস্তা, আর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ছুঁয়েছিল নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত সীমা। একের পর এক হত্যাযজ্ঞ- প্রতিটিই যেন আগেরটিকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছিল।
সময় গড়িয়ে গেছে এক বছর। কিন্তু মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের জন্য সেই সময় যেন থমকে আছে। ছেলের কণ্ঠে আর শোনা যায় না “আব্বু” ডাক। হৃদয়ে প্রতিদিনই ঝরে যায় অশ্রুর ধারা।
বুয়েট কিংবা মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েও রাজনীতিমুক্ত জীবনের আশায় ইয়ামিন বেছে নিয়েছিলেন এমআইএসটি। কিন্তু, সময় তাকে রাজপথে টেনে এনেছিল। বুকের রক্তে লিখেছিলেন প্রতিরোধের ইতিহাস। রেখে গেছেন অগণিত স্মৃতি—যেগুলোর ভেতর দিয়েই আজও বেঁচে থাকার চেষ্টায় স্বজনরা।
“আল্লাহ যেন আমাদের ছেলেকে শহীদের মর্যাদা দেন—তাহলেই আমাদের আর কিছু চাওয়ার থাকবে না,”—বলেন ইয়ামিনের বাবা। ছেলের কবর জিয়ারতে গিয়ে খুঁজে ফেরেন কিছু সান্ত্বনা, কিছু প্রশান্তি।
বন্ধু-স্বজনদের চোখে ইয়ামিন শুধু মেধাবী নন, ছিলেন প্রতিবাদী। ন্যায়ের প্রশ্নে ছিলেন অবিচল। তাই সাভারের পাকিজা মোড় আজ শুধু আর এক মোড় নয়—তার নাম শহীদ ইয়ামিন চত্ত্বর। সাহসের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই জায়গা।
প্রতিদিন বাবার মোনাজাতে জায়গা করে নেন ইয়ামিন। শরীরী উপস্থিতি নেই, তবু অনুভবে আছেন সবখানে। আফসোস নেই বাবার—কারণ বিশ্বাস আছে, পিতা-পুত্রের পুনর্মিলন হবে পরজগতে।