জটিল মস্তিষ্কজনিত রোগে আক্রান্ত সালমান খান, আত্মহত্যার ঝুঁকির কথাও জানালেন নিজেই

বলিউডের অন্যতম সুপারস্টার সালমান খান একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক ও দাতব্যকর্মী। ৫৮ বছর বয়সেও অ্যাকশনধর্মী ছবিতে তার পারফরম্যান্সে বয়স যেন কেবল সংখ্যা। তবে রূপালি পর্দার পেছনে বাস্তব জীবনে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে লড়ছেন তিনি। সম্প্রতি জানা গেছে, সালমান মস্তিষ্কের বেশ কয়েকটি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ রোগে ভুগছেন, যেগুলোর একটি আত্মহত্যার প্রবণতার জন্যও পরিচিত।
নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়া কাপিল শো’-তে উপস্থিত হয়ে সালমান নিজের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, ট্রাইগেমিনাল নিউরালজিয়া, ব্রেইন অ্যানিউরিজ়ম এবং এভি (আর্বোভেনাস) ম্যালফরমেশন–এর মতো গুরুতর মস্তিষ্কজনিত অসুস্থতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।
সালমান বলেন, ‘প্রতিদিন আমার হাড় ভাঙে, পেশিতে টান পড়ে—শারীরিকভাবে আমি দুর্বল। কিন্তু তবু থেমে নেই। ট্রাইগেমিনাল নিউরালজিয়ার মতো যন্ত্রণাদায়ক অসুখ নিয়েও আমি শুটিং করেছি। মস্তিষ্কে অ্যানিউরিজ়ম রয়েছে, আছে এভি ম্যালফরমেশনও। এই রোগগুলো নিয়েও আমি নিয়মিত কাজ করে চলেছি।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সালমান যে ট্রাইগেমিনাল নিউরালজিয়ার কথা বলেছেন, এটি একটি স্নায়বিক রোগ, যেখানে মুখের বিভিন্ন অংশে আকস্মিক এবং তীব্র বিদ্যুৎ-চমকের মতো ব্যথা অনুভূত হয়। অনেক সময় এই অসহনীয় যন্ত্রণার কারণে রোগীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন—এ কারণে এই রোগকে ‘সুইসাইড ডিজিজ’ বলেও আখ্যায়িত করা হয়।
অন্যদিকে, ব্রেইন অ্যানিউরিজ়ম হলো মস্তিষ্কে কোনো শিরা বা ধমনীর অস্বাভাবিক ফোলাভাব, যা ফেটে গেলে প্রাণঘাতী স্ট্রোক কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আর এভি ম্যালফরমেশন এমন একটি অবস্থা, যেখানে শিরা ও ধমনীর সংযোগ অস্বাভাবিকভাবে গঠিত হয়। এতে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি দেখা দেয়।
এমন স্বাস্থ্য জটিলতার কথা সালমান এর আগেও প্রকাশ্যে এনেছেন। ২০১৭ সালের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এই রোগের যন্ত্রণা এতটাই ভয়ানক যে কেউ কেউ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। আমি সৌভাগ্যবান, কারণ চিকিৎসা, আত্মশক্তি এবং মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে এখনো লড়ে যাচ্ছি।’
সাম্প্রতিক সময়ে সালমান খানের শারীরিক অবস্থার অবনতি বলিউডে আলোচনার বিষয় হয়েছে। জানা গেছে, এই কারণে তিনি কিছু সিনেমার প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কয়েকটি চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু করাও সম্ভব হয়নি।