অভিনেত্রী হুমায়রার মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন পরিবারের সদস্যরা

১২ জুলাই ২০২৫ - ১৪:৪০ অপরাহ্ণ
 0
অভিনেত্রী হুমায়রার মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন পরিবারের সদস্যরা

পাকিস্তানের করাচির ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি (ডিএইচএ) ফেজ–৬–এর একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে মডেল ও অভিনেত্রী হুমায়রা আসগর আলীর পচাগলা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার পর এবার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

হুমায়রার ভাই নাভিদ আসগর, যিনি লাহোর থেকে করাচিতে এসে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বোনের মরদেহ গ্রহণ করেন, বলেন, "আমরা হুমায়রাকে ত্যাগ করিনি। যদিও পারিবারিকভাবে কিছু দূরত্ব ছিল, তবে আমরা সবসময়ই তার খোঁজ রাখার চেষ্টা করেছি। গত তিন দিন ধরে মরদেহ বুঝে পেতে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিলাম। আমার বাবার কিছু বক্তব্য হয়তো ভুলভাবে উপস্থাপন হয়েছে। আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত হোক।"

তিনি আরও জানান, পারিবারিক একটি দুর্ঘটনা এবং বাবার মানসিক অবস্থা খারাপ থাকায় শুরুতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয়নি। গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাভিদ বলেন, "মিডিয়া যেন অনুমান নির্ভর খবর না করে বরং প্রকৃত প্রশ্ন তোলে। যেমন, বাড়ির মালিক কেন দীর্ঘদিন ধরে হুমায়রার কোনো খোঁজ নেননি? দরজা কীভাবে খোলা হলো? ফ্ল্যাটে সিসিটিভি ছিল না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।"

নাভিদ আরও জানান, গত এক বছরে পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার হুমায়রার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "আমার মা শেষবার যখন হুমায়রার সঙ্গে কথা বলেন, তখন তিনি নতুন ঠিকানা জানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হুমায়রা তা জানায়নি। এমনকি তার ফোনও প্রায় ছয় মাস বন্ধ ছিল।"

অন্যদিকে, পুলিশ সূত্র বলছে, এখনো মৃত্যুর পেছনে সরাসরি কোনো হত্যার আলামত পাওয়া যায়নি। অ্যাপার্টমেন্টের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। এসএসপি সাউথ মাহজোয়ার আলী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে, তবে হুমায়রার ব্যবহৃত অপর একটি ফোন এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে এবং এখনো কাউকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।

পুলিশ আরও জানায়, ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর থেকে হুমায়রা কোনো বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি।

উল্লেখ্য, হুমায়রা আসগর আলী পাকিস্তানের বিনোদন জগতে একজন পরিচিত মুখ ছিলেন। তার আকস্মিক ও করুণ মৃত্যুকে ঘিরে দেশজুড়ে শোক ও বিস্ময় ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাকী জীবনযাপন, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, পরিবারের বিচ্ছিন্নতা ও মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।