আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল বাহিনী। শনিবার (২৪ মে) দিনভর হামলা চালিয়ে এই হত্যাযজ্ঞ চালায় দখলদার বাহিনী।
সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব হামলায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদের ব্যবহৃত টানেল এবং অবকাঠামো এবং অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছিল। গাজাজুড়ে ইসরায়েলি এসব হামলায় ৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে উত্যকায় এক চিকিৎসকের বাড়িতে বর্বর হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে ওই নারী চিকিৎসকের ১০ সন্তানের ৯ জনই নিহত হয়েছেন। এছাড়া তার আরেক সন্তান ও স্বামী গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শুক্রবার গাজার খান ইউনিসে এই ভয়াবহ হামলা চালায় দখলদাররা। আলা আল-নাজার নামে এ চিকিৎসক নাসের হাসপাতালে কাজ করতেন। গ্রাহাম গ্রুম নামে এক ব্রিটিশ চিকিৎসক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই নারী চিকিৎসকের ১১ বছর বয়সী আহত সন্তানের অস্ত্রোপচার করেছেন তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে ওই নারী চিকিৎসকের ছোট ছোট সন্তানদের মরদেহ বের করে নিয়ে আসা হচ্ছে। যেগুলো হামলার তীব্রতায় পুড়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ডা. মুনির আলবোরস জানিয়েছেন, ওই নারী চিকিৎসককে কর্মক্ষেত্রে গিয়ে দিয়ে আসেন তার স্বামী। এরপর বাড়িতে ফেরার কয়েক মিনিটের মাথায় দখলদাররা ভয়াবহ বিমান হামলা চালায়। ব্রিটিশ চিকিৎসক গ্রুম জানিয়েছেন, ওই নারীর স্বামীও চিকিৎসক ছিলেন এবং তিনি হামাস বা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি লেখালেখি করতেন না।
অন্যদিকে জাতিসংঘের মতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১৯৮ জন শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ আরও উল্লেখ করেছে যে এই বছরের শুরু থেকে ১৩২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে কমপক্ষে ২৫ জন শিশুও রয়েছে। পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের হত্যার পাশাপাশি, গত জানুয়ারিতে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে একটি বড় সামরিক অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে অধিকৃত অঞ্চলের নুর শামস, তুলকারেম এবং জেনিন শরণার্থী শিবিরের প্রায় ৪২ হাজার বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত রয়েছেন।