ফুটবলে নতুন যুগের সূচনা, মাঠে প্রথমবার দেখা গেল ‘গ্রিন কার্ড’
ফুটবলে লাল ও হলুদ কার্ডের ব্যবহারের ইতিহাস পুরোনো। শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা ফাউলের শাস্তিতে এই দুই রঙের কার্ডই এতদিন মাঠের নিয়ম নির্ধারণ করত। কিন্তু এবার ফুটবল দুনিয়া দেখল এক নতুন দৃশ্য—প্রথমবারের মতো রেফারির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে কোচের হাতে উঠল ‘গ্রিন কার্ড’।
চিলিতে চলমান অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপে স্পেন ও মরক্কোর মধ্যকার ম্যাচে এই নতুন নিয়মের প্রথম বাস্তব প্রয়োগ দেখা যায়। রোববার মরক্কোর কোচ মোহাম্মদ ওহাবি একটি বিতর্কিত পেনাল্টি সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে রেফারিকে গ্রিন কার্ড দেখান। নিয়ম অনুসারে, গ্রিন কার্ড প্রদর্শনের পর রেফারিকে বাধ্যতামূলকভাবে সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করতে হয়।
রেফারি তখন ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) মনিটরে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি বাতিল করেন। বরং স্পেনের খেলোয়াড়কে ডাইভ দেওয়ার জন্য দেখানো হয় হলুদ কার্ড। পরবর্তীতে মরক্কো ম্যাচটি ২–০ ব্যবধানে জয় করে।
ফিফার এই নতুন পরীক্ষামূলক উদ্যোগের লক্ষ্য—মাঠের বিতর্ক হ্রাস করা এবং কোচদেরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ দেওয়া। প্রতিটি দল ম্যাচে সর্বোচ্চ দুইবার এই সুযোগ ব্যবহার করতে পারবে। কোচ গ্রিন কার্ড (কিছু টুর্নামেন্টে এটি নীল বা বেগুনি রঙেরও হতে পারে) দেখালেই রেফারিকে ঘটনার ভিডিও পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
এই পদ্ধতি অনেকটা ক্রিকেটের ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস), টেনিসের হক-আই বা আমেরিকান ফুটবলের কোচেস চ্যালেঞ্জ–এর মতো। স্পেন–মরক্কো ম্যাচ ছাড়াও ইতোমধ্যে মেক্সিকোর একটি ম্যাচেও নতুন এই নিয়ম ব্যবহার করা হয়েছে।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এই উদ্যোগ ফুটবলে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী কাঠামোর মধ্যে এটি স্থায়ীভাবে জায়গা করে নেবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালে পর্তুগালে নারীদের এক ম্যাচে ‘হোয়াইট কার্ড’ চালু করা হয়েছিল, যা ‘ফেয়ার প্লে’ বা ন্যায্য খেলার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। তবে সেটি জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। এবার ফিফার আশা, গ্রিন কার্ড ফুটবলকে এক নতুন যুগে নিয়ে যাবে।