কোটা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকার দাবি ছাত্রদলের, বলছে রাজপথেই বদলে গেছে ইতিহাস

২৫ জুলাই ২০২৫ - ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
 0
কোটা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকার দাবি ছাত্রদলের, বলছে রাজপথেই বদলে গেছে ইতিহাস

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখার দাবি করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের মতে, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের গতি ও কাঠামো বদলে দিয়েছিল ছাত্রদল।

ছাত্রদলের ভাষ্যমতে, এক সময় দমন-পীড়নে কোণঠাসা হলেও, জুলাই বিপ্লবের সময় লক্ষাধিক নেতাকর্মী রাজপথে নামে এবং নিজেদের বুক চিতিয়ে দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে। ১৪২ জন নেতাকর্মীর শহীদ হওয়ার দাবি করে ছাত্রদল বলছে, এই আত্মত্যাগই রাজনীতিতে বড় ধরনের মোড় এনে দেয়।

ছাত্রদলের দাবি, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীতে ছাত্র-জনতার ঢল নামে। কারফিউ, গ্রেফতার আর নিপীড়নের মধ্যেও রাজপথে নেমে আসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঢেউ। শ্রাবণের স্নিগ্ধ বিকেলে “স্বাধীনতার সুবাতাস” বইয়ে দেয় আন্দোলনে। তারা এটিকে “স্বৈরাচার হটিয়ে বিজয় অর্জনের দিন” হিসেবে দেখছে।

ছাত্রদলের নেতাদের ভাষ্য, ১৬ বছরের ক্ষমতাসীন দুঃশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে তারা রাজনৈতিক ও সংগঠিত শক্তি দিয়েছিল, যা পরবর্তীতে গণআন্দোলনের রূপ নেয়।

ঢাবির জিয়া হল শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রিজভী আলম বলেন,

“যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের 'রাজাকার' বলে অভিহিত করেন, তখন রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা পাল্টা বলি— 'তুমি স্বৈরাচার'। এই স্লোগানই আন্দোলনের ধারা পাল্টে দেয়।”

ছাত্রদল জানায়, ১৬ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদ ও চট্টগ্রামে ওয়াসিম আকরাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। মাঠে নামার নির্দেশ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন,

“কারফিউর মধ্যেও মাঠে থাকার সাহস জুগিয়েছিলেন তারেক রহমান। আমরা সফল হলে জনগণও সাহস পাবে— এ বার্তা পেয়েই আমরা রাজপথে নেমেছিলাম।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান বলেন,

“আমার কণ্ঠেই প্রথম আওয়াজ ওঠে— কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না। আজই আমরা জয়ী হবো। সেই কথার সাড়ায় পাঁচজন তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ হন, আহত হন অসংখ্য মানুষ।”

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন,

“আন্দোলনের শুরু থেকে তারেক রহমান প্রতিটি পর্যায়ে দিকনির্দেশনা ও সমর্থন দিয়েছেন। আন্দোলনের কৌশল, সময়ানুগ সিদ্ধান্ত এবং মাঠ পর্যায়ের পরিচালনায় ছাত্রদল সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।”

তিনি আরও বলেন,

“৫ আগস্ট আমরা যখন বিজয়ের স্লোগানে উত্তাল, ঠিক তখনও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদলকর্মীদের ওপর চালানো হয় নির্মম দমন-পীড়ন। রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ।”