মার্কিন সেনাবাহিনীতে ‘গুপ্তচর’ নিয়োগের চেষ্টা, নেপথ্যে ২ চীনা নাগরিক!

২ জুলাই ২০২৫ - ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ
 0
মার্কিন সেনাবাহিনীতে ‘গুপ্তচর’ নিয়োগের চেষ্টা, নেপথ্যে ২ চীনা নাগরিক!

গুপ্তচরবৃত্তি এবং সামরিক বাহিনীর ভেতরে ‘গুপ্তচর’ নিয়োগের চেষ্টার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে দুই চীনা নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক বিবৃতিতে মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, অভিযুক্তরা হলেন—ইউয়ান্সে চেন (৩৮) এবং লিরেন ‘রায়ান’ লাই (৩৯)।

বিবৃতির বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে চীনের বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটির (এমএসএস) হয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড পরিচালনা, জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্যের বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের ব্যবস্থা করা, নৌঘাঁটি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং এমএসএস-এর পক্ষে লোক নিয়োগের চেষ্টা করারও অভিযোগ রয়েছে।

মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের বলেছে, লাই এমএসএসের একটি নেটওয়ার্কের সদস্য। গোপন অভিযান পরিচালনা সহজের উদ্দেশ্যে এই নেটওয়ার্ক সহজে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে। ২০২১ সালের দিকে লাই যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসকারী চেনকে নিজের সম্পদ বা ‘অ্যাসেট’ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ শুরু করে।

এফবিআইয়ের হলফনামায় বলা হয়, চেনের পরিচিতদের মধ্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্য কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার পর লাই তাকে বিদেশে গিয়ে এসব বিষয়ে সরাসরি আলোচনা করার আহ্বান জানায় এবং প্রয়োজন হলে বিমান টিকিটের খরচও বহনের প্রস্তাব দেয়।

তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এরপর তারা এমএসএস-এর এজেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২০২২ সালে তারা মার্কিন অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার একটি লকারে ১০ হাজার ডলার নগদ অর্থ রেখে আসেন, যা তথ্য সংগ্রহের বিনিময়ে অন্যদের দেয়ার জন্য সরবরাহ করা হয়েছিল।

এরপরের বছরগুলোতে চেন নৌবাহিনী সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে লাইকে পাঠান এবং সরাসরি এমএসএসের সঙ্গে নিয়োগসংক্রান্ত আলোচনা চালিয়ে যান বলে হলফনামায় উল্লেখ আছে। এসব তথ্যের মধ্যে নৌবাহিনীর কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্যও ছিল। একবার চেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো শহরে গিয়ে নৌবাহিনীতে নতুন নিয়োগ পাওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন নামের একটি বিমানবাহী জাহাজ ঘুরে দেখেন।

এফবিআই জানিয়েছে, ‘এ ধরনের ঘটনা চীনের সামরিক সক্ষমতা বিস্তারের অংশ। চীন সরকার তাদের নৌবাহিনী আধুনিক করতে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্লু-ওয়াটার নেভাল ক্যাপাবিলিটি অর্জনের চেষ্টা চালাচ্ছে ‘ ব্লু-ওয়াটার ক্যাপাবিলিটি হচ্ছে সমুদ্রপথে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার সক্ষমতা।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি বলেন, ‘এই মামলার মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো—আমাদের সামরিক বাহিনীতে অনুপ্রবেশ এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ভেতর থেকে দুর্বল করার জন্য ধারাবাহিক এবং আগ্রাসী প্রচেষ্টা চলছে  চীনা সরকারের।’