জাতিসংঘে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সোচ্চার পাকিস্তান ও ফ্রান্স

২৯ জুলাই ২০২৫ - ০৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ
 0
জাতিসংঘে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সোচ্চার পাকিস্তান ও ফ্রান্স

জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও দুই-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়ন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাকিস্তান ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ‘ফিলিস্তিনে সহিংসতা, খাদ্য সহায়তা আটকে রাখা এবং হাসপাতাল, শরণার্থী ক্যাম্প ও ত্রাণ কাফেলার ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিমালার সকল সীমা অতিক্রম করেছে।’ তিনি দৃঢ় ভাষায় বলেন, ‘এই সম্মিলিত শাস্তি বন্ধ করতে হবে এখনই!’

দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের সহ-আয়োজক ছিল সৌদি আরব ও ফ্রান্স।সম্মেলনে ইসহাক দার ফ্রান্সের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,‘আমরা ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই এবং অন্যান্য দেশগুলোকে এই মুহূর্তে এগিয়ে এসে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানাই।’ খবর জিও নিউজের।

তিনি বলেন, 'গাজা এখন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির কবরস্থান হয়ে উঠেছে। ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, নিহত হয়েছেন-এটি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং আন্তর্জাতিক আদালতের বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের জঘন্য উদাহরণ।’

ইসহাক দার বলেন, ‘পাকিস্তান শুধু রাজনৈতিক বিবৃতি নয়, বরং ফিলিস্তিনের প্রাতিষ্ঠানিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাস্তব সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।' তিনি জানান, পাকিস্তান জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সেবাদানে ফিলিস্তিনকে কারিগরি সহায়তা দিতে প্রস্তুত এবং ওআইসি ও আরব পরিকল্পনার আওতায় সংস্থাগুলো গঠন ও রক্ষা ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক।

উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিচার বিলম্বিত হলে ন্যায়বিচার অস্বীকার করা হয়। কিন্তু যখন ন্যায়বিচার প্রজন্মের পর প্রজন্ম অস্বীকার করা হয়, তখন তার পরিণতি হয় আরও ভয়াবহ।' তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'এখনই সময় ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার। এটাই হবে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির সেরা নিশ্চয়তা।’

এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সম্মেলনের উদ্বোধনে বলেন, ‘গাজার ধ্বংসযজ্ঞ সহ্য করার মতো নয়। এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে- দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ছাড়া বিকল্প নেই।’ ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল ব্যারো বলেন, 'যুদ্ধ থামাতে হবে-কিন্তু সেটাই শেষ নয়। এরপর প্রয়োজন টেকসই রাজনৈতিক সমাধান। একমাত্র দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের বৈধ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারে।'

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই সম্মেলনে অংশ নেয়নি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘এটি ভুল সময়ে আয়োজন করা হয়েছে এবং এতে শান্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।’