ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কুরবানির বিধান

কুরবানি ইসলামের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত, যা মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়ে থাকে। এটি ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.) এর আত্মত্যাগের ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রতি বছর ঈদুল আজহার দিনগুলোর নির্ধারিত সময়ে কুরবানি আদায় করা হয়।
এই প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে- যদি কোনো ব্যক্তি কুরবানির সময় ঋণগ্রস্ত থাকে, তাহলে কি তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে? ইসলামি ফিকহবিদরা এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
যদি কোনো ব্যক্তি ঈদুল আজহার দিনগুলোয় সাময়িকভাবে ঋণগ্রস্ত থাকেন এবং চলতি বছর পরিশোধযোগ্য ঋণের অংশ বাদ দেয়ার পর তার হাতে ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ অবশিষ্ট না থাকে, তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। কারণ, শরিয়তের দৃষ্টিতে তিনি আর্থিকভাবে সক্ষম বলে বিবেচিত নন।
অন্যদিকে যদি কোনো ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে এমন পরিমাণ সম্পদ থাকে যে, চলতি বছর পরিশোধযোগ্য ঋণ বাদ দেয়ার পরও তার হাতে ‘নেসাব’ পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ অবশিষ্ট থাকে, তাহলে তার ওপর কুরবানি ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ, ঋণ থাকলেই কুরবানি থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে না, বরং মূল বিবেচ্য বিষয় হলো পরিশোধযোগ্য ঋণের অংশ বাদ দেয়ার পর ‘নেসাব’ পরিমাণ সম্পদ তার হাতে অবশিষ্ট থাকে কিনা। (বাদায়িউস সানায়ি, ৪/১৯৬; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়্যা, ৫/২৯২)